মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০০০

প্রথম দেখা

চারপাশে রোদের ঢেউ আছড়ে পড়ে গালে
পায়ের তলে পিচে ফুটে খই
ধোঁয়া আর ধূলিময় ধরণীতে বসে ভাবি
নরক থেকে খুব দূরে বুঝি নই।
কোথা থেকে নাকে অচেনা গন্ধ এসে লাগে
ক্লেদাক্ত সেই প্রহরের এক অজানা অচেনা সুবাস
মুখ ফেরাতেই.......
হঠাৎ হৃদস্পন্দন যেন থেমে যায়.........
আবর্জনামাঝে কোন গোলাপকেও দেখিনি এত নিষ্পাপ আর পবিত্রসাজে
কালো আকাশের চাঁদও বুঝি লজ্জা পাবে
তাকে দেখে
মূহুর্তেই ইন্জিনের ভট্‌ভট্‌, কালো ধোঁয়া, বাসের হর্ণ আর কোলাহল
রুদ্ধ এই বুকে নিস্তব্ধ নিশ্চল হয়ে যায়।
নির্লজ্জ আমি তাকে দু'চোখ ভরে দেখি--শুধুই দেখি
তাকে--বলিনি কিছুই আমি,--কেন জানি!
বিস্ময় আর আবেগ হয়তো করেছিল গ্রাস, আমার হৃদয়।


উন্নত সেই শহরের অনুন্নত এক যানে
সে আমি মুখোমুখি--তফাৎ শুধু দুইজনের যতদূর
অন্যসময় তাতে সে লজ্জা পেত.................
আমার হৃদয় অস্থির হয় বারেবার
বোঝেনি কিছুই সে, কেন জানি; বড় নিষ্ঠুর!
বাইরে তখন লু হাওয়ার মাতামাতি
ইন্জিন চলে ধুঁকেধুঁকে, যেন যক্ষার রোগি
ফুসফুস ভরে মনোক্সাইড বিষে, করে জ্বালা চোখে
তবু তা নির্নিমেষ, তাকিয়ে রয় -- শুধুই তার পানে
হঠাৎ দমকা হাওয়ায় এলোমেলো হয় সে
হাওয়ায় ওড়ে আঁচল তার, এসে পড়ে আমার হাতে
হয় সে ত্রস্ত-চঞ্চলা
যেন অতিচেনা, এক মেদুর সুবাস পাই--
ফিরিয়ে দিই তার সে আঁচল কাঁপাকাঁপা হাতে
তবু ক্ষণিকের তরে সুমুখে আমার
খুলে যায় এক সোনালি দরোজা
করিনি অনুপ্রবেশ--পাছে ভয়...............
সে যদি কখনো আমার না হয়!
এক টুকরো আকাশ দেখলাম, তার বুকের মাঝে
নরম, পেলব
তার বুক, যেন আজ চৈত্রের দারুন দুপুরে
সেখানে শুধুই নিষিদ্ধ আলো খেলা করে
শুভ্র তার অন্তর্বাস ক্ষণমাত্র ধরে, দেখা দিয়ে যায় হারিয়ে
যা গান হঠাৎ শুনেছিলাম এক প্রভাতে
আমার হৃদয়ে তার কল্লোল, উচ্ছাসে ওঠে মেতে
শুধু সে...........একবার তাকিয়ে চোখ তার নিল ফিরিয়ে
দেখল না, কী আকুলতা আজ আমার চোখের নীড়ে!


নির্লজ্জ আমি তাকে দু'চোখ ভরে দেখি,
কারণ?
এত পবিত্র সৌন্দর্য কখনো দেখিনি আমি আগে!