বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০০৯

সে

এক.
সে আসছে – উদ্দেশ্যবিহীন,
সে দ্রুত হাঁটছে, সে ধীরে মরছে – এমন মরণ!
বাসের গা ঘেঁষে সে চলে যায়, বাস অনড়োস্থির
শেষ জানালায় মাথাটি বেরিয়ে আসে ঘোলাটে থুতু
ছুঁড়লে সে চকিতে হয়েছে ধীর– কিংবা সরল






দুই.
চাঁদ মেঘের পিঠের পেছনে চুপ; উঁকি দিবে না বুঝে
সে খুব অবলীলায় খুন করছে আয়নাজগৎ
টুকরো টুকরো ধুলো আর প্রকাণ্ড রোদ অনায়াসে
নাভিপথে ঢুকে পড়ে! আঃ শীতলরহিত-গমন






তিন.
এসব কয়েনেজ রেখে মাথা নাড়ে সে, এসব ফাঁকিবাজি ছাড়ো
মাথা নাড়ে সে আর বলে, ‘আমার ভেতরে জ্বলে কোমল-সকাম-আমি,
আর এ-সকল কয়েনেজ শিরাভেদী গতিতে আমাকে মারছে’,
মরে গেলো সে, অথচ তখনও মেঘ ও চাঁদ ও বাস ও মাথা ও থুতুটি
উলম্ব ঝুলছিল...






চার.
নদী বেঁকে শুয়ে থাকে, সেটা নিয়ে কারো আপত্তি থাকে না। নদী বেঁকে শুয়ে আছে এরকম দৃশ্য কেউ দেখে নাই। কোনোদিনও! তারপরে এক কবি বলেছেন, নদী বেঁকে শুয়ে আছে। আমরা পড়েছি আর চোখের ভেতর সর্‌সর্‌ করে ময়াল সাপের মতো নদীটা ঢুকে গেছে। মাথায় মগজে এঁকেবেঁকে শুয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে নদীর শরীর মোচড়ায়, আমাদের হৃদয়ে পড়ে টান। শরীর টান টান দুঃখে ভেঙে যায়– নদীর না, আমাদের।


নদীটি বেঁকে শুয়ে আছে, তাতে কারো আপত্তি নাই। নদীকে যেদিন তোমরা ক’জনে মিলে নদীর পাশে শুইয়ে দিলে এলোমেলো করে, সেদিন নদী আরো নিথর হয়েছে। কবি সেখানে ছিলেন না। কেউ ছিলো না (অথবা ছিলো)। তোমরা চলে গেলে, একে একে সকলে সেই আশ্চর্য দৃশ্যটি দেখেছে। নদীর পাশে নদীর বাঁকানো লা–ল টুকটুকে নগ্নশরীর। সবার খুব ভালো লেগেছে। সবার খুব খারাপ লেগেছে।


চিত্রগ্রাহক ছবি তুলেছে। ফুল এক্সপোজারে, দুটা ওয়াইড আর দুটা ক্লোজ শট।


সাংবাদিক রক্তপরিমাণ ও কাপড়পরিমাণ রেশিও করেছেন আঁক কষে।


কবি ছিলো কেবল নিশ্চুপ, সকলের শোরগোলে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন