বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০০৮

জ্বরতপ্ত স্পন্টেনিউয়্যিটিতে সেলফোন বা আমার চোখ

ভোর হইতে যাইতেছে। আমি জানালার পাশে একটা জংধরা জালি টপকে বাইরে তাকায়ে অদ্ভুত লালাভা দেখতেছি। মাথায় সবকিছু ছিঁড়াছিঁড়া থট্‌ শুক্রাণুর মতোন খসমান লেজ নাড়ায়ে চলতেছে। এগুলারে টোপে ধরা যায় না। সূঁচালো জালে ধরার চেষ্টা করি।


১.
একটা হালকা জিনিশ শুরুতেই! স্পন্টেনিয়াস লেখালেখির একটা প্রচেষ্টা চালাইতেছি। দেখি ঠুক ঠুক করে কামার সাহেব কিরাম বেতের সোফা বানাইতে গিয়া চেয়ার বানায়ে ফেলেন! সেখানে নিচের চার লাইন বান্ধছি। কেমন হইলো!! 




"তোমার জন্যে নীলচে তারার একটুখানি আলো
দিতে পারলে বড়ো বেশি লাগতো আমার ভালো
কিন্তু তুমি ফুঁক মাইরা কেন নিভায়ে দিলা?
নিভে যাওয়া বাতি হাতে মনটা আমার বিলা!"






২.
খুবই নিম্নমানে বা উচ্চমানে অবস্থানের শখ হয় কখনও কখনও। সেখানে থাকতে হলে কী কী ক্রিয়াপালন বা শর্তপূরণ করতে হয় জানি না। সেজন্যে আমারও ওসব স্থানে যাওয়া হয় না। তবে কেউ যখন নিম্নে থেকে আমার দিকে সশ্রদ্ধ দৃষ্টি ফেলে আমি তার কৃতিত্বটুক চেটে-পুটে-গিলে খাই। আবার কেউ যখন উচ্চ থেকে আমারে করুণা করে থুতু ফেলে দেয়, তার প্রতি ভক্তি উথলায়ে দুধের বলগ আসার মতোন চুলা ভিজায়ে দিয়ে বের হতে থাকে। মাঝখানে থেকে আহা!! আমি কতো সুখ সুখ কুসুম লাভ করি!




৩.
জ্বরতপ্ত অবস্থাটা খুব মোহনীয়। আমি পাতলা কাঁথা মুড়ে শুয়ে নিজের ওমে গরম হতে থাকি। গত দু'দিন এরকম কেটেছে। তারপরে আমি গা-ঝাড়া দিয়ে উঠে চামড়া থেকে তাপ পামোলিভ সাবানে ঘষে তুলে ফেলেছি। তারপরে টাইলস বেয়ে সাবানের ফেনায় সওয়ার হয়ে জ্বরকণার চাদর যখন চুঁয়ে চুঁয়ে স্যুয়ারেজে চলে গেলো, আমি হাহাকার করে উঠেছি। দৌড়ে হালকা ভেজা শরীরেই আমি কাঁথাটা আঁকড়ে ধরি, আঁতিপাতি করে খুঁজি।


নাহ্‌! আমাকে ছেড়ে সে মাদক ঘোর চলে গেছে।




৪.
এখানে জেগে থাকার আগেই নোনতা বিস্কুট মিশিয়ে র'চায়ের মগ ব'সে থাকে/
এখানে র'চায়ের মগের পাশে আমার চল্টাওঠা সেলফোন ব্লিঙ্ক করে/
এখানে ব্লিঙ্কের সাথে ঘরের লাইট জ্বলে জ্বলে জেগে থাকে/
লাইটের আলো বাইরে আঁধারে দু-একটা তক্ষককে হিংস্র করে দেয়/


নোনতা বিস্কুট-র'চা-সেলফোন-লাইট-তক্ষক-
এসবকিছু ফেলে আমি কীভাবে তোমার জন্যে চোখ খুলে হাতে নিয়ে রক্ত গোলাপ-
জেগে থাকি?






ফুটনোটঃ কিসুই হয় নাই, কিসুই হবে না, কিসুই হস্যে না!






সাথে এক্টু যোগ করিঃ গাই ফওক্‌স-কে মনে পড়তেছে। লোকটাকে কেউ চিনে না সেভাবে। কিন্তু তাকে নিয়ে একটা নার্সারি রাইম আছে। শিশুদের আমরা দেশদ্রোহিতার শাস্তি শিখাইতে এইটা আউড়াইঃ


রিমেমবার রিমেমবার, দ্যা ফিফথ অব নভেম্বার
গানপাউডার, ট্রীজ্‌ন অ্যাণ্ড প্লট।
আই সি নো রিজ্‌ন, হোয়াই গানপাউডার ট্রীজ্‌ন
শ্যুড এভার বি ফরগট!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন