বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০০৮

ইন্দ্রিয়াবেগ ট্র্যাফিকিং




১.


... ... এ-খা-নে কো-ন-ও র-ঙ নে-ই কে-ন-না স-ব আ-লো মু-ছে গে-ছে অ-থ-বা স-ব আ-লো জ্ব-লে আ-ছে যে-হে-তু আ-লো-তে স-ব র-ঙ মে-শা-নো সে-হে-তু ধ-রে নি-তে পা-রি স-ব- র-ঙ মি-শে গে-ছে অ-থ-বা মু-ছে গে-ছে ... ...


প্রায়ালোকিত বিছানা জুড়ে তুমি
স্টীলশরীরে পড়ে আছো
একটু মুচড়ে হাত কিংবা পা,
অথবা টানটান করেই!


আমি ঢেউ দেখি,
নৌকা দেখি,
পাল দেখি,
স্রোত দেখি,
ছই দেখি,
নৌকোজমা কুয়াশা দেখি,
ছইঘেরা মেঘ দেখি,
আঁধারের অভাবে আমি সংশয়ে পড়ে যাই।


হাত বাড়ালেই তীব্র ধারালো ধাতবে
কেটে ছড়ে যেতে থাকে রোমকূপ
কাটাক্ষতে বইতে থাকে ভায়োলেট-মেঘ


নিবিড় হলে ইন্দ্রিয় খুব বিপন্ন হয়, ইন্দ্রিয়োর্ধ্ব স্পর্শ জমে ওঠে হীনমাছির নীলচোখ ঘিরে
বস্তুত আমি নীলমাছির পুঞ্জাক্ষি প্রেফার করতে শিখি
বস্তুত আমি ঝাঁঝাঁলো লাল বুদবুদ ভালোবাসতে শিখি
সেখানে তোমার চিহ্নমাত্র নেই!


অনায়াসে ঠেলে দিতে থাকো পর্যাবৃত্তে যেভাবে তোমাকে দেখেছিলো
আদিগন্ত চেনামাঠ দু'খানা বেতার-টাওয়ার-শিশ্ন মাথায় নিয়ে।
আমি দূরে যেতে যেতে ক্রমশই ক্ষীণ এবং ভারি হতে থাকি
অভিস্রবণ বড়ো ক্লান্তপ্রকৃয়া মনে হয়!


শেষেঃ
গহ্বর থেকে চোখ খুলে ফেলি;
আঙুলগুলোও একে একে, টেনে টেনে;
ত্বক ফেলে দিলে হলুদাভ মেদ আর লালরঙ মাংস চেয়ে থাকে পলকহীন;
বাকি দুই - সীসা ঢেলে বন্ধ করে দেয়ার পর
আমি ধীরে ধীরে হিমায়িত ভাগাড়গামী রথে কর্ণকে সারথি করি


মৃত্যুর চেয়ে গাঢ় কোন গান, চুমুর চেয়ে ঘন কোন গলনে জ্বলতে থাকে তোমারারামার চারিপাশ।


২.


বাঁশিবাদক সুর থামিয়ে থমকে দিলে ঘোর কেটে যাওয়া
থতমত আমি দৃষ্টি অনুসরণ করি,
দৃষ্টির শেষরেখায় জ্বলন্ত টিউবের নিচে
সারবাঁধা মানুষের সামনে দিয়ে
এক রূপসী আগুন ছুটে আসে।


আগুনের গায়ে শাদা-শামুক মালা লেগে থাকে,
আগুনের পায়ে সূক্ষ্ণহিল বর্শা গেঁথে থাকে,
আগুনের শরীরে কোমল ধোঁয়ামেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার ভয়ে আটকে থাকে,
আগুনের লম্বা পায়ের ঝুল-বরাবর আমি আমার গলনাঙ্ক লেখা রাখা দেখি।
মুহূর্তেই আমার কাছে আগুন,
দুমড়ে মুচড়ে নীলখাম-প্রেমপত্র হয়ে যায়।
মুহূর্তেই সে সর্‌সর্‌ করে ময়াল সাপের মতো,
ইনহেলারে পাফ্‌ নেয়ার মতো,
চুমুকে ব্ল্যাক কফি জিহ্বায় টানার মতো,
এমনকি আরো অনেক আশ্লেষ-গ্রহণের মতো
আমার চুল-ত্বক-ময়লা শরীর ভেদ করে ঢুকে পড়তে থাকে।


আমি আগুন খুলে খুলে দেখি-
বাদামী শরীরে পোশাক খুলে খুলে নিবিড় হই।
আগুনের আভরণ খসে গেলে বাদাম-ত্বক চর হয়ে জেগে ওঠে।
চরের বালিতে আমি ব্রাস্ট্র্যাপের আইল পাই,
সেখানে দুতিন-বিঘা জমিন কেনা নিয়ে
আমি পান-খাওয়া দালালের সাথে বচসা বাঁধিয়ে দিই!
আগুন আমাকে টেনে টেনে তার ভিতরে নিতে থাকে,
আরো গভীরে
আরো গভীরে
আমি গলে গলে যেতে থাকি।
সেখানে নিমগ্ন চৈতন্যের জল এসে পাড় ভিজানো তাল ঠুকে ঠুকে
চরের জমিন ভিজিয়ে দেয়।


এখানে বাদামে চিরহরিৎ তিল জেগে থাকে
এখানে নৌকায় কালোকাঠে খাঁজ, খাঁজ পলি জমা হয়
এখানে প্লাবিত-উপকূল জুড়ে আমি জমিহারা আর্তনাদ গুনি।


সবশেষে ঘনোচাঁদঘোনোকাশফুলঘনোবাঁশবন প্যান্টিলাইনের চেয়ে গাঢ় হয়ে জেগে থাকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন