মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১০

এলোমেলো ...

বনানী থেকে ফার্মগেইট হয়ে কাঁটাবনে মাত্র বিশ মিনিটে পৌঁছে গেলে সন্দেহ হয়ঃ ঘড়ি বিকল হয়েছে, অথবা এ শহরে মৃতদের বসবাস। অযুত মাল্টিভার্সের কোনো একটায় হয়তো এটা সম্ভব হতেও পারে। কিন্তু আমি যে শহরে থাকি, সেখানে পথেই আনন্দ!


টুকরো জিনিসগুলোর জন্যে মায়া হয়। অনেক বছর ধরে ওরা আমার সাথে আছে। দিনে দিনে ক্ষয়ে গেছে, সময় খুবলে খুবলে নিয়ে গেছে শরীর-মহার্ঘ্য। আমি কেবল খোলনলচে আগলে রেখেছি - পুরাতন স্মৃতির মতো। টুকরো জিনিসগুলোর ফিডেলিটির কোনো দাম দেয় না কেউ।


চাঁদ পৃথিবীর একটি উপগ্রহ। কোন্‌ কালে পৃথিবীর উদর থেকে ছিটকে গিয়ে জন্মেছে, নাড়ী কেটেছে ভ্যাকুয়াম। তারপরে মায়ের নাড়ীর টানে ঘুরছে। মাঝে মাঝে লুকিয়ে পড়ে, তবে মায়ের চোখ ফাঁকি দিতে পারে না।


মানুষ স্বভাবতই স্ক্র্যুড-আপ। আমি, তুমি, সে, তারা, আমরা, ও, ওরা, তারা, উনি, আপনি, উনারা, আপনারা। সব সর্বনাম বিশিষ্টজন নামসর্বস্ব হলেও, তারা সবাই মূলত স্ক্র্যুড-আপ। আমরা খালি ভড়ঙ আর ভান ধরি, মুখোশ পরি, পরিহাস্যের যাপনকাল।


সেদিন কম্পুখানা মারা গেলো। পাঁচশো গিগাবাইটের স্মৃতি মুছে গেলো এক মুহূর্তেই। জমে থাকা কথাগুলো, চিঠিগুলো, ছবি ও তোমার হাতে ধরে তিরতিরে প্রদীপ - মুছে গেলো। হারিয়ে গেলো খুনসুটির বছর, কান্নার দুইশ বিনিদ্র রাত। তার সাথে চলে গেলো জমিয়ে তোলা সবকিছুই।


সুঁইয়ের ছ্যাদায় সুতো ভরার মতো জীবনের এক ফুটো দিয়ে সব ঘটনা-রটনা পুরে দেয়ার চেষ্টা করছি। ঘটনাগুলোর বেখাপ্পা গড়নের কারণে বারবার হড়কে যাচ্ছে, ঠিকঠাক ঢুকছে না। মাঝে মাঝে করুণ রস জিবে করে ওগুলোকে ভিজিয়ে দিচ্ছি, নরম করে দিচ্ছি। তারপর ক্রুদ্ধ উৎকণ্ঠা, এবারে নিশ্চয়ই জীবন গুছিয়ে যাবে, মৃত্যুর আগেই জিতে যাবো শ্বাসরুদ্ধ।


এভাবে হয় না জেনেও ছেলেটা চেষ্টা করছে। চারপাশে অনেকে হা হা হা হা করে হাসছে তার ব্যর্থতায়। কিন্তু তারা খেয়াল করছে না এই সব ব্যর্থতা এক বিশালকায় স্তুপ তৈরি করে ফেলছে। দূর থেকে দেখলে সেটা পাহাড় বলে বিভ্রম হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন