মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১০

স্পনটেনিয়াস ইরাপশন


দুনিয়া জুইড়া বিয়াপক গিয়াঞ্জামের খবর মাঝেমাঝেই আমরা রাষ্ট্র করি। আমাগে রাষ্ট্র জুইড়াও বিয়াপক গিয়াঞ্জাম দুনিয়ার মানুষ জানে। এই তো সেইদিন বিজাতীয় টিভিতে দেখতেছিলাম ওয়েলস রাজ্যে সাগরের মধ্য টিলা টিলা দ্বীপ, হেলিকপ্টারে ঘুরে ঘুরে ফোকাস করতেছে। দ্বীপের গায়ে খালি একখান ধবল বকের মতোন বাতিঘর বানায়া রাখছে, দ্বীপে যাওনের ব্যবস্থা অনুপম। খালি একখান সেতু তৈয়ার করছে, যেটা ডাইনে বামে ঝুলে। দেখোনের পরে মনে হইলো একটুসখানি দ্বীপ সেইটারেও আমরা ছাড়ি নাই! কোমল স্তনে কামড়ের মতোন বাতিঘর বানাইতে হইবো মানুষের। দুনিয়া জুইড়া গিয়াঞ্জামগুলান এনট্রপির লাহান বাড়তেছে কেনু কেনু কেনু?...

 
অদ্য খবর পাইলাম একটা চ্যানেল মৃত্যুবরণ করিয়াছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হইয়াছিলো ব্লা ব্লা ব্লা। আগামি কিছুদিন তার মৃত্যু নিয়ে সরগরম থাকিবে তাবৎ মিডিয়াপাড়া, কারওয়ান বাজারের ভ্রান্তিময় নাম কাওরান বাজার। তারপরে আবার বসুন্ধরা সিটি পুড়িয়া গেলে মৃত আত্মার চেহলাম অনুষ্ঠিত হইবে। বিগত মৃতেরা যেমন ১/১১-এর পরে ফিরিয়া আসিয়াছিলো, তেমনি উল্লিখিত মৃতও ফিরিয়া আসিবে। পঞ্চবৎসরাধিক কাল সে টিঁকিয়া থাকিতে পারিবে বলিয়া আশা করি।


ব্লগিংয়ের সবচেয়ে মজার দিকগুলো হলো প্রতিমতের সাথে শান্তি(!)পূর্ণ সহাবস্থানের চেষ্টা। একটা বন্ধ বাক্সে নানা ধরনের গ্যাস ভরে খুব তাপ দিতে থাকলে অণুগুলো যেমন ছুটোছুটি লাগিয়ে দেয়, মাঝে মাঝে ব্লগীয় মিথস্ক্রিয়াকে আমার সেরকমই মনে হয়। টুশ করে একটু গুঁতো খেলাম তোমার সাথে, তারপরে মাথা ডলতে ডলতে পিছিয়ে আসতে গিয়েই তার সাথে ঢ্যাপ করে ধাক্কা। দু'জনেই মুখে 'মানুম না' আর মনে 'স্যুরি' বলে দুইদিকে হাঁটা দিতেই দেখি বিরাট গোলচক্করে আঠালো ঝগড়া। লুঙ্গি কাছা মেরে, ধুতি মালকোচা মেরে আর শার্টের হাতা গুটিয়ে ধর্মাধর্মের নেতাপোঁতারা হেই হেই করে তেড়ে আসছে! আমরা দুজনে শত্রুতা ভুলে প্রথম পাতা ছেড়ে দৌড় দিলাম!


অনেক মৃত্যু ইদানিং জমা হচ্ছে হালখাতায়। নতুন বছরে পরিচিতের বৃদ্ধ ও আপাতবৃদ্ধ আত্মীয়েরা মারা যাচ্ছেন। সামাজিক বৈশিষ্ট্যে আমরা শোকপালন করছি, এবং কুলখানিতে দেখছি বিলানো হয় বিরিয়ানি, মিষ্টি প্রভৃতি রসনাবিলাস। মৃতের জন্যে আমার খালি লাগে অযথাই!


আজকাল অনেকেই টাকা ধার চায় আমার কাছে। ধার চাইলে আমি 'না' করতে পারি না। নেতিবাচকতা এবং সেই 'না' শুনে তাদের হতাশা আমারে বল্লমের মতোন গেঁথে ফেলে। একবার এমন হওয়ার পর থেকে আমি পিঠে সেই বল্লমের দাগ নিয়ে প্রতিজ্ঞা করছি আর নয়! এখন থেকে চাহিবামাত্র বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবো। টাকা ধার চাহনেওয়ালারা বুঝে গেছে মনে হয়, আমার পকেট থেকে সুতাকৃমির মতোন টাকা টেনে টেনে নেয় তারা। যেন শর্মাহাউজে গিয়ে স্প্যাগেট্টি খাচ্ছেন খুউব, মৌজে!


মজার ব্যাপার হলো, আমার ভেতরে অবিমৃশ্যতার পরিমাণ পর্বতের গায়ের গুল্মের সংখ্যার সমান। হুট করেই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা, এবং সেই সুবাদে ঝঞ্ঝাট বা ঝামেলার তোড় সামলানোর অভ্যাস আমি রীতিমত চর্চা করি। বেশিরভাগ সময়েই একগুঁয়েমির মাত্রা ছাড়ানো কারণ দেখে আশেপাশের সকলেই আমাকে কাছিম ডাকে। কেউ কেউ ভুল উচ্চারণে কাসিম ডেকে বসে। আমি হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সেই অমিতশক্তির ভাতিজা হতে ইচ্ছুক! তিনি এই বঙ্গে না এলে আমি হয়তো নমশুদ্রই হয়ে রইতাম! 


এটেনশন সীকিং ডিজওর্ডার ব্লগারদের মাঝে প্রবল। নাটুকেপনায় ভরা এক একজন ভার্চুয়াল ড্রামাকুইনদের মাঝে আমিও অন্যতম। এই ড্রামা কতো এপিসোড ধরে চলছে, মাঝে মাঝেই যবনিকাপাতের দশা হয় হয়, আবার হেলতে হেলতে টলটলায়মানতা থেকে আবার দাঁড়িয়ে যাই আমরা! এই যেমন ধরুন অতিঅধুনা অভ্র-বিজয় দ্বৈরথে কেউ কেউ বিজয়ের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন। কারণ প্রবল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ালে তোড়ের অংশ গায়ে লাগে, কী বিষম পুলক উৎপন্ন হয়। শরীরের নরম জায়গাগুলো তাদের উদ্দীপ্ত হয়ে উঠে, ইয়ে, জানেনই তো, কেমন লাগে? 


কী অদ্ভুত বিকেল। আমাদের শহরের ধুলো আর মানুষগুলো দিন দিন যেভাবে বিবর্ণ হয়ে উঠছে, তাতে এমন বিকেল চোখে পড়ে না। হারিয়েই গিয়েছিলো তারা। আজকে কী ঘোর চেপেছে, কে জানে? প্যালেটে ঘন রঙ গুলে কেউ একজন দামাল তানে মেতেছে খুব। ছোপ ছোপ রঙিন দৃশ্য ফুটে উঠছে। সবুজাভ হলুদে ভেসে যাচ্ছে আকাশ, মেঘের গায়ে ধূসরতা। মেঘগুলো ইশকুল ভুলে এদিকে যলে এসেছে যেন, আনমনে হাঁটতে হাঁটতে। তারপরে বিষম তাড়া করেছে কালো কালো মেঘ- যারা আমার কাছে ইশকুলের দারোয়ান। "অ্যাই অ্যাই ছোকরার দল! ফিরে আয়! ফিরে আয়!" বলে ভাগিয়ে নিয়ে গেলো সাদা তুলো-মেঘদের। তারপর কয়েকটা বেভুলো মেঘ ভয় পেয়ে কেঁদে ফেললো। মাঠের ছেলেগুলো দৌড়ে ছাউনির তলে, খেলা তোলপাড় ভজঘট। দারোয়ানের দাবড়ের চোটে ঠিকমত কাঁদার আগেই উড়ে গেলো বৃষ্টি। হলুদ রঙা সেই বৃষ্টির কিছুটা মাখার জন্যে আমি বাইরে এসে দাঁড়ালাম। ওমা, কী বাউণ্ডুলে দ্যাখো? আমাকে ঝুম করে ভিজিয়েই পালালো। এখন হু হু বাতাসে আমি স্থবির স্থানু......!

(সমাপ্ত)
......
## নতুন ধরনের একটা চিন্তা মাথায় আইলো। একটা ব্লগ লিখুম, যেইটা একটু পর পর আপডেট করতে থাকুম। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন