রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

রাস্তাপারিয়া!

প্রথাগত মিশুকটি বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক মাঝরাস্তা বরাবর। হালকা ফুঁসছে। ধিকিধিকি কাঁপছে। বসন্ত এসেছে শুনে বেশ উৎচকিত সচেতন। রূপবতী ও কামুক কিছুটা। দুলছে পেখমের মতো আলো। সবুজ পর্দা। কালোটে রাস্তার পেটের 'পরে নানারঙা গাড়ি।

বাহন মানবের। দরজা আটকে বসে থাকো, কেননা মানুষের প্রকৃতি ছিনতাইপ্রবণ। খুলে নিয়ে যাবে হাড়মাস। জানালা। গলার নেকলেস। খামচে দেবে স্তন। জানালায় কালো পর্দা লাগাও। তুমি মিশুক নও যে ধিকিধিকি কাঁপবে। সে স্বাধীনতা নেই। ঢেকে রাখো।

গুটিবসন্তের মতো টাউনবাস। একেকটি মহা-উপন্যাস। বেঢপ মোটা ও শতপাঠে জীর্ণ, শত-আরোহনে তার প্রবেশপথগুলো কালশিটে কালশিটে। গুটিবসন্তের দাগের মতো কালোটে রাস্তার 'পরে দগদগ করে। ওঠে নামে মানব। কেউ কেউ পা-দানিতে ঝুলে অর্ধেক ভেতরে, অর্ধেক বাইরে। দোলে আর কেঁপে কেঁপে ওঠে।

রাস্তায় খালি পায়ে নামতে হয় না, পা পুড়ে যাবে। সশব্দ চাকা চলে যাবে শরীরের ওপর দিয়ে। মটামট ভেঙে যাবে হাড়গোড়, অস্থি মিশে গুড়ো গুড়ো পাউডার হবে পূর্ণ ননীযুক্ত। তাই ফুটপাতে চলুন - যাই। হাঁটি হকারের লালাভ জিহ্বা পাশ কাটিয়ে। ঘষে দেই যার তার চামড়া। সাথে লেগে যায় অপর-ঘামের স্রোত - নোনাঘ্রাণ মিশমিশে মোটা মানবের কাঁধ ও পিঠ থেকে চলাচল করে।

তবে কেউ কেউ থাকে। অ্যানার্কিস্ট ভিখারি। ভিক্ষা করে হাত বাড়িয়ে কালোটে রাস্তার পরে কালো পর্দার গাড়িতে সবুজ পর্দার খোলা মিশুকে সবুজ গ্রিলের বদ্ধ-নিরাপদ সিএনজিতে গুটিবসন্তের বাসে চেপে বসে তারা দোদুল্যমান মানবের ভেতর সেঁধিয়ে যায় অনায়াসে। অ্যানার্কি এখন সকল যোনিপথ ও গুহ্যদ্বারে চলাচল করছে। সচরাচর আমরা তা টেরও পাই না!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন