বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

মন্তাজ

মাঝে মাঝে এক দুই লাইন কবিতার মতো ভালোবাসার মতো শব্দের পুঞ্জ শান্ত পুকুরে ঘাই মেরে ওঠে, নিস্তরঙ্গে ওঠে ঢেউয়ের স্রোত, ছায়া ছায়া পাড়ে বসে নিজের ভেতরে সেই ঢেউগুলো একটু একটু করে তীরে ভিড়তে থাকে, চুপচাপ দেখি।

এই কবিতার মতো ভালোবাসার মতো পংক্তি কেনই বা জন্মায়, কেনই বা জ্বালায়। সবটুকু গুছিয়েও রাখতে পারি না, আমি বড়োই নিরুপায় অগোছালো। মেঘের মতো সঞ্চয়িতা হতে পারবো না, জেনে গেছি অনেক আগেই, স্কুল পালানোর বেলায় ভয়ে ভয়ে কুড়িয়ে নিয়েছি দুয়েক পশলা বৃষ্টি।

---

নতুন গল্প লিখছি রোজ, রোজ ক্লান্তিহীন নতুন প্রেমে পড়ছি, প্রেমে পড়তে পড়তেই আরো গভীরে ডুবছি। কিছু কিছু ঘটনা ছুঁয়ে যাচ্ছে, কিছু কিছু কথা মনেও থাকছে না। যেন ভেলায় ভেসেছি, নিরন্তর অকূল জলের কোলাহল চারপাশে। যেন তুমুল ব্যস্ত ট্রাফিকে দাঁড়িয়ে আছে, চারপাশ থেকে ছুটে আসছে টেরিফিক ট্রাক, বিবমিষা বাস। ছুটে পালাতে ইচ্ছা করে, অথচ স্থানুর মতোই নিশ্চল হয়ে গতিময়ের প্রেমে মজে গেছি।

এখানে হঠাৎ করেই কিছু বদলে যাবে না। পৃথিবীর সকল আহ্নিক গতির কোন মূল্য এখানে নেই। সবই শান্ত সমাহিত ও ধীর প্রক্রিয়ায় চলবে আরো অনন্তকাল, ঘুরে ফিরে একই সুর গাঁথবে সকলে, একই প্রেমে একে একে মারা যাবো তুমি আমি আমরা। অকস্মাতের অনুপস্থিতিতে আমাদের মাঝে ঘন হয়ে থাকবে ধ্রুবক, নক্ষত্রের আলো, সদ্যই কেউ হারিয়ে যাবে না। বরং অনেক অনেক মায়ায় জড়িয়ে থাকবে আশে পাশে আঁশে পাঁশে

---

ছেলেটি মেয়েটির কথা আর কতো বলবো। তোমরা সবাই জেনে গেছো নানাভাবে। ছেলেটির কোন সহায় ছিলো না, যে বড়ো ছেলেমানুষের মতো ভালোবাসতো। বাস্তবতার ধাক্কা তার গায়েই লাগতো না। সে একদম বোকা বোকা ছিলো। কতো কিছু হতে পারতো সে, বড়ো গায়ক, বড়ো নায়ক, বড়ো ডাক্তার কিংবা ব্যবসায়ী। মেয়েটা তো তেমন ছিলো না, বরং অনেকটাই বিপরীত। মেয়েটা খুব কর্মঠ আর অমিশুক ছিলো। অনেক কাজ করতো, নিজেকে প্রমাণের জন্য, জগতের সাথে যুদ্ধ করতো। ছোট ছোট দুইহাতে শক্ত করে জোয়াল ঠেলে বেড়ে উঠছিলো।

ছেলেটির সাথে মেয়েটির কিছুই মিলছে না। তারপরও তাদের মিলে গেলো। ছেলেটাও বদলে গেলো, মেয়েটাও বদলে গেলো। তারা হুট করে প্রেমে মজে গেলো। কী দেখেছিলো মেয়েটির চোখের তারায়, কী গন্ধ পেয়েছিলো ঘন অবিন্যস্ত চুলের গভীরে, ছেলেটা কাঙালের মতো দু'হাত বাড়িয়ে দিলো। মেয়েটিও কী জাদু দেখেছিলো ছেলেটির হাসিতে, কোথায় দুয়েকটা তারা-খসা আলো চলকে গেছে আকাশের পেয়ালা থেকে। তারা বুঝতেও পারলো না।

সেই বোকা বোকা ছেলেটি, সেই ছোটোখাটো মেয়েটি কোনোদিন এক হবে না। তাদের ভেতরে কোন শিশু জন্মাবে না। তাদের ভেতরের ভালোবাসাটুকু থির জমে থাকবে পদ্মপাতার জল হয়ে। তারপর, অনেক অনেক দিন পর, একদিন পৃথিবীর ঘূর্ণনে তারা ছিটকে ছিটকে হারিয়ে যাবে। তাদের সাথে ঘূর্ণিতে হারাবে চোখের জল, মনের হাহাকার। খালি করে দেয়া কফির টেবিল, গ্লাসের গায়ে দুয়েক ফোঁটা শিশিরও মুছে যাবে। তাদের জন্য আমার মন হু হু করবে, চোখে টলটলে দুয়েক ফোঁটা কুয়াশা জমা হবে। শাদা ক্যানভাস ফেলে আমি একলা হয়ে উঠে যাবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন