রবিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

একটি মূর্তিনির্মাণের সময় যা যা ঘটে

"উদভ্রান্ত সফেদ, দুলে ওঠো নীল তেপান্তর!"
আমি তার প্রান্তরেখায় তোমার মূর্তি বানাই,
ক্রমশ এগিয়ে আসা তারাদল; সেখানে
স্মিত হাসিমুখঃ নিয়ন-সুলভ- এঁকে রাত জেগে থাকে। আর
আমি হাতুড়ি বাটাল মেপে, নিখুঁত আঘাতে
প্রান্তরেখা ঝকঝকে ধারালো করি


যারা পর্যটক ছিলেন। আমাদের দেশে, মাটি ঘেঁষা সে'সকল
জটাচুলো পথিকেরা, এসে খুব মনোযোগী, দেখে
আমার কেরদানি। মূর্তির গায়ে দিগন্তভেদী আলো জমে থাকে,
আর আমার হাতের শিরায় জেগে ওঠে শীত পেরুনো গান!


একটু একটু রেখা ফুটে ওঠে
যেমন কালোস্তন, মেঘের বৃন্তেরা, আর সবুজ ঘামকণা,
প্রভৃতি লেগে থাকে অবহেলা-ভঙ্গিমায়।


আমি হাত সরিয়ে ফেলি।


পর্যটক-কাফেলায় মৃদু গুঞ্জন, ছলকে ওঠা
আর বিস্মিত দর্শকের চোখে সুখ, প্রকাশিত হওয়া
এমন বাস্তব ঘটনায় আমাদের প্রান্তরেখায়
সপ্তাশেষের হাট বসে। বিক্রীত হয়ে যায় চকিত অর্থমূল্যে
দৈনন্দিন ঘটনাবলী, সাধারন ক্রিয়াবাচকতা
এবং নেহায়েত মামুলি আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত,
স্বপ্নরহিত ভোর বা আশাবাদী বিকেলরঙ।


মূর্তিনির্মাণের সময়েই এইসব ঘটে যায় নিয়ম মেনে
তাই জড়ো হওয়া মানুষেরা রাগ করেন না
মন খারাপ করেন না
সুখী বা অসুখী হন না
এমনকি উদ্দীপিত/নির্বাপিতও হতে ভুলে যান
আমি হাত মুছে ফেলি আর একটু সরে এসে মূর্তির চোখে নিজেকে মরে যেতে দেখি
প্রান্তরেখায় জ্বলজ্বলে সত্যের মত, অনির্বাণ ধ্রুবতায় আমার মৃতদেহ ভাস্বর হতে থাকে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন