সোমবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০০৯

আর্থ্রোপোড-ভার্টিব্রেট মিথোস্ক্রিয়া

মশা কামড়াচ্ছে। পিন্‌ পিন্‌ করে কয়েকটা মশা ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার রুমটাতে। আমি হাত বাড়িয়ে চটাশ চটাশ করে মারার চেষ্টা করেছি কয়েকবার, মরেনি। আমার লক্ষ্যভেদ করার প্রয়াস খুবই হাস্যকরভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সম্ভবত হস্ত-চক্ষুর সমন্বয় করার ব্যাপারটিতে আমি খুবই খারাপ। একটু পরে চটাশ চটাশের কারণে লাল হয়ে যাওয়া হাত টেবিলে মেলে রেখে আমি মশা-মারার হাল ছেড়ে দেই, এবং এই সুযোগে দুয়েকটা মশা আমার হাত-পায়ে দ্রুততার সাথে কামড় দিয়ে দেয়।


সবেগে নাড়া খেয়ে তারা হুল ফুটানোর পরবর্তী রক্তপানের ক্রিয়াটি করতে পারে না। আমি সূঁচবেঁধা ব্যথাটুকু ছড়িয়ে যেতে দেখে নিরুপায়ের সান্ত্বনা হিসেবে এটা চিন্তা করি যে, যাক্‌, রক্ত তো খেতে পারেনি! তবে ধীরে ধীরে হাতের এবং পায়ের মশা-কামড়ানো জায়গাগুলোতে একটা অস্বস্তিকর চুলকানি এবং তৎপরবর্তী অদম্য ইচ্ছাটি সয়ংক্রিয়ভাবে আমাকে অস্থির করে তোলে। এরকম অবস্থায় দপ্তরের পোশাকী ভদ্রতাকে পাশ কাটিয়ে আমি নখের মাহাত্ম্য প্রমাণ করার জন্যে খশখশ করে হাত-পায়ের হুল-বাসস্থান চুলকাতে থাকি। রক্ত বাঁচানোর তৃপ্তির তখন লেশমাত্র বাকি নাই।




২.
অনেক নীচে লোকটিকে শার্ট-প্যান্ট জাবড়ে জাবড়ে চুলকাতে দেখে আমার খুবই ভালো লাগে। রক্ত খেতে না পারায় খুব খারাপ লাগছিল। সবেমাত্র নল ঢুকিয়েছি, একটা চোঁ চোঁ টান দেবার আগেই ব্যাটা এমন ঝাঁকুনি দিল, যে ছিটকে পড়ে গেলাম। হুলটা চামড়ার ভেতরে ঢোকানো ছিল। ঝাঁকিতে ব্যথা পেয়েছি, এখন টন্‌টন্‌ করছে! একটু উড়ে ওপর থেকে দেখলাম যে লোকটা খুব দ্রুততায় নড়াচড়া শুরু করেছে। মনে বেশ তৃপ্তি ছড়িয়ে পড়ল, রক্তপান না করতে পারার অশান্তি আর ক্ষুধাটাও এখন আর গায়ে লাগছে না!


তবে ক্রমশ ক্ষুধাটা বাড়ছে। খুব ইচ্ছা করছে লোকটার কলারের কাছে বের হয়ে থাকা চামড়ায় গিয়ে বসি। মনকে বুঝালাম দিলাম, ব্যাটা তো ব্যস্ত আছে চুলকানোতে, এইফাঁকে গিয়ে চট করে দু'টান...






পরিশিষ্টঃ
ঘাড়ের কাছে আবারও পরিচিত তীক্ষ্ণহুল টের পেলে আমি ডান হাত সপাটে চালিয়ে দেই। চটাশ!






ভাগশেষঃ
হাতের সাথে ভেজা ভেজা চটকানো মশা-মৃতদেহ উঠে আসে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন