সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৯

টেবিলিক

ভাঁজ করা কাগজের ভেতরে একটা বিয়ের নেমন্তন্ন লুকিয়ে আছে, চারভাঁজি কাগজে ভাঁজে ভাঁজে বর, কনে, ও তাদের পিতামাতাগণ গা মিশিয়ে শুয়ে আছেন চিড়েচ্যাপ্টা। তাদের পাশেই, কাগজের গায়ে জমছে ধুলো, গত বছরের নেমন্তন্নের চিঠিটা ফেলা হয়নি! একটু দূরে রঙহীন তরল বিষ নিয়ে অ্যারোসলের ধাতবে ঢুকে যাচ্ছি আমি। বিন্দু বিন্দু বিষ, বাতাসে! ঝুম ঝুম ঝুমকার মত ঝুলছে, বাজছে। মুখোমুখি পড়ে আছে রুপালি ঘড়ির শরীর, জড়াজড়ি করছে তার সাথে আমার চাবির গোছা। গোছায় চারটা চাবি- পুরনো হতে হতে কালচে কালচে রঙ তাদের… একটা তোমার চাবি, তোমার ভেতরের গলিঘুপচিতে যাতে না হারাই সেই সংকেত লেখা আছে মোহন রূপেই। আরেকটা চাবিতে খোলে কালোগহ্বর যতো, আমাদের শরীরের মাঝে।


দূরে দেখি মোলায়েম মানিব্যাগখানা পেটমোটা হয়েছে অনেক! পেটের ভেতরে তোমাদের খসখসে ঠিকানাসকল। খাজাঞ্চিখানার নোটগুলোও চকচকে আজকাল, ইদানিং আমি শক্ত একটা কার্ড ঢুকিয়ে দেই তার পেটের ভেতরে আর কড়কড়ে নোটগুলো বেরিয়ে আসে। আজব যন্ত্র এক- শরীরে ধারণ করছে অর্থবিষ, শুনেছি মুদ্রাও তরলিত ক্রমশ!…
আরো আছে মুখ উঁচিয়ে থাকা গোলমুখো ওয়েবক্যাম-জালচোখ! গোলাপি মন্থর আলো জ্বেলে আমাকে দেখছে নিনির্মেখ। আমিও তাকে দেখি, রূপসী গোল চোখের মাঝে তার কোনো তাড়না নেই। ঘোর আছে, নিস্পৃহ ক্লান্তিহীন ঘোরে ফেলা চোখ তার তোমার চোখের চেয়ে অল্প একটু অসুন্দর…


ঝনঝনিয়ে বাজছে সেলফোন, কোষে কোষে তীব্র শিহরণ উঠে গেছে দুদ্দাড় তোড়ে জেগে উঠছে চরাচর। আমি ভাঙছি বাতাস ও নিদ্রার জোট। আলো! ওহ! আহ! চুরমার!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন